ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘টেস্টটিউব শিশুর’ জন্ম হয়েছে। শিশুটি সুস্থ আছে। সরকারি কোনো হাসপাতালে এটাই প্রথম টেস্টটিউব শিশু জন্মের ঘটনা। ঢাকা মেডিকেলের পরিচালকের কার্যালয় ও চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহ দেড়েক আগে শিশুটির জন্ম হয়েছে। শিশুটি সুস্থ আছে।

তবে একটি উপযুক্ত দিনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উপস্থিতিতে শিশুটির কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে চায় ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্ধ্যা নারীর মা হওয়ার আধুনিকতম পন্থা হচ্ছে ‘টেস্টটিউব শিশু’ নেওয়া। এই পন্থায় স্ত্রীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয় আর স্বামীর শরীর থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করা হয়।

গবেষণাগারে সেই ডিম্বাণু ও শুক্রাণু নিষিক্ত করে কৃত্রিমভাবে ভ্রূণ সৃষ্টি করা হয়। পরে সেই ভ্রূণ স্ত্রীর গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। স্বাভাবিক ভ্রূণ যেভাবে গর্ভাশয়ে বেড়ে ওঠে, কৃত্রিম ভ্রূণও একইভাবে বেড়ে উঠতে থাকে। এভাবে ৯ মাস পর যে শিশুর জন্ম হয়, তাকে টেস্টটিউব শিশু বলা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, টেস্টটিউব শিশুর ব্যাপারে মা-বাবা এবং চিকিৎসক কেউই সামান্যতম কোনো ঝুঁকি নিতে চান না, তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিশুর জন্ম হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে। বাংলাদেশে প্রথম টেস্টটিউব শিশুর জন্ম হয় ২০০১ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।

এরপর একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের শিশুর জন্ম হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই প্রথম এ ধরনের কোনো শিশুর জন্ম হলো।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সন্তান না হওয়ার কারণে অনেক স্বামী-স্ত্রী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। অনেকে অনেকভাবে সন্তান জন্মদানের চেষ্টা করেন।

বহু দম্পতি প্রতিবেশী দেশ ভারতে যান বন্ধ্যত্বের চিকিৎসার জন্য। দেশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বা ভারতে টেস্টটিউব শিশুর জন্য ব্যয় অনেক বেশি। কোনো নিম্নবিত্তের পক্ষে সেই ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। ঢাকা মেডিকেলের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানে এই সুযোগ তৈরি হওয়ায় অনেক নিম্নবিত্ত দম্পতিও নতুন করে সন্তান জন্ম দেওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করবেন।
জাতীয়স্বাস্থ্য